৬০ বিঘার অতিরিক্ত জমি কেউ নিতে পারে না, বেশি হলে তা সরকারের
দেশের কোনো ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক হতে পারবে না। কারও এক নামে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে সরকার অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। ভূমি সংস্কার আইন 2023-এর খসড়ায় এ কথা বলা হয়েছে।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। জমির মালিকানার ক্ষেত্রে সীমা নির্ধারণ, স্থাবর সম্পত্তির বেনামি লেনদেনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, গ্রাম থেকে উচ্ছেদের ক্ষেত্রে পালনীয় বিষয়, জমির প্রজাদের অধিকার তুলে ধরা হয়েছে।
1984 সালে ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এখন এই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। কিন্তু নতুন আইনে ওই অধ্যাদেশের অনেক কিছুই অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি এক নামে ৬০ বিঘার বেশি (১ বিঘা সমান ৩৩ শতাংশ) জমির মালিক হতে পারবেন না। কারো নামে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে সরকার অধিগ্রহণ করতে পারে। আর এর জন্য সরকার কোনো ক্ষতিপূরণ দেবে না।
তবে আইনে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন- সমবায় সমিতি; চা, কফি, রাবার এবং ফল বাগান মালিক; শিল্প কারখানার কাঁচামাল যেখানে উৎপাদিত হয় সেই জমির মালিক; রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত জমির মালিক; ওয়াকফ ও ধর্মীয় ট্রাস্টের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
ভূমি আইন লঙ্ঘন করলে এক লাখ টাকা জরিমানা বা এক মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে নতুন আইনে। এ ছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু ও ডাটাবেস তৈরির কথাও বলা হয়েছে আইনে।
নতুন আইনে বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদের জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আদালতের আদেশ ছাড়া কোনো কর্মকর্তা বা কোনো কর্তৃপক্ষ জমি থেকে মালিককে উচ্ছেদ করতে পারে না।
গ্রামাঞ্চলে খাস হিসেবে বাস্তুভিটার উপযুক্ত জমি পাওয়া গেলে প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবার, ভূমিহীন কৃষক ও শ্রমিকদের বসতি স্থাপনের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী, বর্গা চুক্তির আগে কোনো বর্গাদার মারা গেলে চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত বর্গাদারের পরিবারের সদস্যরা ওই জমি চাষ করতে পারবেন।
আইনে আরও বলা হয়েছে, মালিক যদি তার দেওয়া জমি বর্গা হিসেবে বিক্রি করতে চান, তাহলে তাকে প্রথমে বর্গাদারকে জানাতে হবে। বর্গাদার 15 দিনের মধ্যে মালিককে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। আর কোনো বর্গাদার ১৫ বিঘার বেশি জমি চাষ করতে পারবে না।
বর্গ চুক্তি বাতিলের বিষয়ে নতুন আইনে কিছু শর্ত রাখা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জমির মালিক যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া জমি চাষ না করলে চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। এ ছাড়া ওই এলাকায় সাধারণত যে পরিমাণ শস্য চাষ করা যায়, সে পরিমাণ জমি যদি অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়, বর্গাদার নিজে চাষ না করলে চুক্তি বাতিল হতে পারে। জমির মালিক ব্যক্তিগত চাষের জন্য জমি চাইলেও চুক্তি বাতিল হতে পারে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রেজাউল হক(রনি),
কারিগরি সহযোগিতায়: অক্ষ টেক