ঢাকা    ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ইং | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া সবচেয়ে ছোট হরিণ!

  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ৮.৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ২২০ বার পঠিত

৩০ বছর পর সম্প্রতি ফিরে পাওয়া ভিয়েতনামের এই (ছবির) মাউস ডিয়ারের মত ছোট হরিণ বাংলাদেশেও ছিল। যা বাংলাদেশে ছাগুলে লাফা, শোস বা শোশা নামে পরিচিত ছিল। এর ইংরেজি নাম মাউস ডিয়ার। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম ক্ষুরযুক্ত স্তন্যপায়ী প্রাণি মাউস ডিয়ার আঁকারে প্রায় বুনো খরগোশের মতো। আবার দেখতে অনেকটা হরিণের মতো। তবে প্রথম দেখায় অনেকেই একে বিরল প্রজাতির খরগোশ বা হরিণ ভেবে ভুল করতে পারেন।

এদের দৈহিক দৈর্ঘ ৫৭ সেন্টিমিটার, লেজের দৈর্ঘ ২.৫ সেমি। একটি প্রাপ্তবয়স্ক শোসার ওজন প্রায় ৭ পাউন্ড। এদের আছে অনেক প্রজাতি। প্রজাতি ভেদে কোন কোন প্রজাতি আকারে আরও বড় হতে পারে। এরা নিশাচর প্রাণি। রাতের বেলা খাবার সন্ধান বা ঘোরাফেরা করে। দিনের বেলা আড়ালে লুকিয়ে থাকে। তাই সহজে মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। এরা উদ্ভিদভোজী তবে কেউ কেউ পোকা-মাকড়, মাছ-কাঁকড়াও খায়।

একসময় বাংলাদেশেও শোসা ছিল বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তবে স্মরণকালে এর দেখা মিলেছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ভারতে দেখা মেলে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Indian spotted chevrotain (Moschiola indica)।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ৩৪ বছর আগে বাংলাদেশে এর দেখা মিললেও বিলুপ্তি ঘোষণার প্রায় ৩০ বছর পর সম্প্রতি এদের দেখা মিলেছে ভিয়েতনামে। ত্রিশ বছর আগে মনে করা হয়েছিল মাউস ডিয়ার ভিয়েতনাম থেকেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ভিয়েতনামে এই প্রাণির নাম সিলভার-ব্যাকড চেভ্রটেইন অথবা মাউস ডিয়ার। ভিয়েতনামের উত্তর-পশ্চিমের বনে সাম্প্রতিক এ প্রাণি ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পরে।

শোস নিয়ে কথা বলেছেন সুন্দরবনের আদি প্রত্নতত্ত্ব ও বন্যপ্রাণি গবেষক ওয়াইল্ড টিমের কর্মী ইসমে আজম। তিনি ইতোমধ্যে সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিলুপ্ত প্রাণির জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন এবং নতুন নতুন তথ্য সংগ্রহে কাজ করে যাচ্ছেন। শোস নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও মাউস ডিয়ার ছিল বা মতান্তর আছে। আমি বাংলাদেশের সেই মাউস ডিয়ারের প্রথম তথ্য পেয়েছিলাম আমার মায়ের কাছে। শুনেছি রংপুর অঞ্চলে ১৯৮৫ সালে প্রাণিটি দেখা গিয়েছিল। রংপুর অঞ্চলে এ প্রাণিকে শোস বা শোশা বলা হতো। কেউ কেউ আবার খরগোশকেও শোস বা শোশা বলে। দেখতে খরগোশের আকারের তবে পায়ে ছাগলের মতো ক্ষুর আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বৃহত্তর যশোর অঞ্চলেও এদের উপস্থিতির উল্লেখ পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে এদের ছাগুলে লাফা বলা হতো বা হয়। সাধারণত খরগোশকে স্থানীয়ভাবে (যশোর) লাফা বলা হয়। কিন্তু এ প্রাণির পা ছাগলের মতো হওয়ায় একে ছাগুলে লাফা বলা হয়। মজার বিষয় বয়স্ক লোকজনের সাথে কথা বলে জেনেছিলাম, বুনো খরগোশের পা বিড়ালের মত হওয়ায় নাকি তা মুসলিমদের জন্য হারাম। তবে যে খরগোশের পা ক্ষুরযুক্ত সেই খরগোশ খাওয়া হালাল।’

ইসমে আজম বলেন, ‘আমার কয়েক বন্ধু এই ছাগুলে লাফা দেখেছে, এমনকি ধরে খেয়েছে বলে দাবিও করেছিল। তবে এখনো জীবিত প্রমাণ পাইনি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে প্রাণিটির একাধিক আঞ্চলিক নাম থাকলেও বাংলাদেশের বন্যপ্রাণির তালিকায় কোথাও এর উল্লেখ নেই। কিংবা অনুসন্ধান হয়েছে কি-না জানা নেই।’

তবে প্রাণিটি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে জানিয়েছেন এই গবেষক।

এসইউ/পিআর

নিউজটি শেয়ার করুন

মন্তব্য

এ জাতীয় আরো খবর.

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রেজাউল হক(রনি),

কারিগরি সহযোগিতায়: অক্ষ টেক

প্রধান কার্যালয়: ৫০৭/সি,  খিলগাও ঢাকা-১২১৯ । মোবাইল: ০১৭১৩৬১৫৫৩৩,০১৬১১২২৬৬৯৯ ইমেইল: contactbd7news@gmail.com
themebd7news6534333223
© All rights reserved 2016-2023, bd7news.com